New York
সোমবার, ০১ ডিসেম্বর ২০২৫
Breaking
আইডিআরএ–বীমা কোম্পানি বৈঠকে আইন সংশোধন ও কমিশন বাতিলে ঐকমত্য নতুন নীতিগত সিদ্ধান্তের আগে বীমার চেয়ারম্যানদের সঙ্গে বসছে আইডিআরএ ন্যাশনাল লাইফ পরিচালনা পর্ষদের ২৮৫তম সভা নন-লাইফ বীমায় এজেন্ট কমিশন বাতিলের নীতিগত সিদ্ধান্ত প্রোটেক্টিভ ইসলামী লাইফের মেট্রো প্রোজেক্টে নতুন গতি তৃতীয় প্রান্তিকে ৩৮৪.৭৬ কোটি টাকার দাবি নিষ্পত্তি করেছে গার্ডিয়ান লাইফ দিনাজপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির গ্রাহকের পাঁচ লাখ টাকার মৃত্যুদাবি চেক হস্তান্তর স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতে বেঙ্গল ইসলামি লাইফ ও ব্র্যাক হেলথকেয়ারের চুক্তি বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটিকে প্রোটেক্টিভ ইসলামী লাইফের মৃত্যুদাবীর চেক হস্তান্তর বিশেষভাবে সক্ষম ১৫০ ব্যক্তির জন্য সিআরপি ও মেটলাইফ ফাউন্ডেশনের ‘জাগরণ’ দক্ষতা উন্নয়ন কর্মসূচি

পিপলু বিশ্বাস এক লড়াকু বীমা ব্যক্তিত্ব: চার দশকের ক্যারিয়ারে এখনো ছুটে চলছেন নিরন্তর   

  • প্রকাশের সময় : ২ বছর ৫ মাস ১ সপ্তাহ ৩ দিন ১৯ ঘন্টা ১৯ মি. আগে, ০৭:৫৫:৪০ পি.এম, শনি, ২৪ জুন ২০২৩
  • 6128
ক্যাপশন বীমা ব্যক্তিত্ব পিপলু বিশ্বাস, মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা, ডায়মন্ড লাইফ ইন্স্যুরেন্স
বিশেষ প্রতিবেদক:

বীমা পেশায় পিপলু বিশ্বাসের যাত্রা শুরু হয়েছিল আজ থেকে প্রায় চার দশক আগে,  প্রয়াত বীমা ব্যক্তিত্ব মুজিবুল হায়দার চৌধুরীর দেখানো স্বপ্নের পথ ধরে। ১৯৮৪ সালে ম্যাট্রিক পাসের পর প্রথম কর্মজীবন শুরু করেছিলেন ন্যাশনাল লাইফ ইন্স্যুরেন্সে যোগদানের মধ্য দিয়ে। বীমা ব্যক্তিত্ব মুজিবুল হায়দার চৌধুরী পথ প্রদর্শক হলেও বীমা শিল্পের জন্য পিপলু বিশ্বাসকে তৈরি  করেছেন আরেক প্রথিতযশা ব্যক্তিত্ব এটিএম জাফরুল্লাহ চৌধুরী।

পিপলু বিশ্বাস বীমাখাতে এসেছিলেন বেকারত্ব গুছিয়ে বড় হওয়ার স্বপ্ন নিয়ে। সেই স্বপ্ন তার পূর্ণ হয়েছে বহু সাধনায়।

প্রায় চার দশক আগে মাধ্যমিকের গন্ডি পেরিয়ে কলেজে পা রাখা নবীন এক বীমা কর্মী থেকে দেশের স্বনামধন্য বীমা কোম্পানি ডায়মন্ড লাইফ ইন্স্যুরেন্সের মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা পদে অধিষ্ঠিত হয়েছেন তিনি। তার সুদক্ষ নেতৃত্বে প্রতিনিয়তই সামনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে ডায়মন্ড লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি।

তবে এতখানি পথ পাড়ি দেয়া এতটা সহজ ছিল না পিপলু বিশ্বাসের জন্য।  বীমা খাত সম্পর্কে মানুষের নেতিবাচক ধারণা ভাঙতে প্রতিটি পদক্ষেপেই লড়াই করতে হয়েছে তাকে। বীমা সম্পর্কে নেতিবাচক ধারণা দূর করার এই প্রচেষ্টা শুরু করেছিলেন খোদ নিজের পরিবার থেকেই। এরপর থেকে চলছে নিরন্তর।

 

বীমা কোম্পানিতে কাজ শুরু করে প্রথম পলিসি হোল্ডার হিসেবে বহু  কষ্টে বাবাকে রাজি করিয়েছিলেন পিপলু বিশ্বাস। সেই স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে তিনি বলেন,” বীমায় আমার প্রথম পলিসিহোল্ডার আমার বাবা। অনেক কষ্টে সব নেতিবাচক দিককে পেছনে ঠেলে বাবাকে পলিসির জন্য রাজি করিয়েছিলাম। বাবা যেদিন প্রথম প্রিমিয়ামের পাঁচশ টাকা আমার হাতে তুলে দিয়েছিলেন, সেদিন সবচেয়ে বেশি খুশি হয়েছিলাম। জীবনে প্রথম যখন কমিশনের নয় হাজার টাকা পেয়েছিলাম সেদিন খুশিতে বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েছিলাম। চোখ দিয়ে শুধু অশ্রু গড়িয়ে পড়েছে, কোনো কথা বলতে পারিনি।”

বাবার দেয়া প্রিমিয়ামের সেই পাঁচশ টাকাই আশীর্বাদ হয়ে রইল পিপলু বিশ্বাসের জীবনে। সারা জীবনের জন্য বীমাকেই ক্যারিয়ার হিসেবে বেছে নিলেন তিনি।

নিজের স্বপ্নকে এগিয়ে নিতে কাজ শুরু করলেন রাজধানী ঢাকায় এসে। তবে শুধুমাত্র বীমাকে ক্যারিয়ার হিসেবে বেছে নিয়ে এই শহরে টিকে থাকাটাও অতটা সহজ ছিল না তার জন্য।

সামর্থ্য না থাকায় ১৯৮৭ সালের দিকে কখনো কখনো সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের সবুজ বৃক্ষ ছায়াও অফিস হয়ে ওঠে তাদের। এরপর দোজাহ ম্যানসনের একটি ছোট্ট অফিসে কার্যক্রম শুরু। এভাবেই হাঁটি হাঁটি পা পা করে পথচলায় সাফল্য এসেছে সফল বীমা ব্যক্তিত্ব পিপলু বিশ্বাসের।

বিজ্ঞাপন

ক্যারিয়ারের এক পর্যায়ে যোগ দেন সন্ধানী লাইফ ইন্স্যুরেন্সে। সেখান থেকে প্রোগ্রেসিভ লাইফ ইন্স্যুরেন্সে।সন্ধানী লাইফের ১১ বছরের ক্যারিয়ারে অত্যন্ত দক্ষতা ও সাফল্যের সঙ্গে বিভিন্ন পদে দায়িত্ব পালন করেছেন পরিশ্রমী বীমা ব্যক্তিত্ব পিপলু বিশ্বাস। সন্ধানী লাইফের চট্টগ্রাম অঞ্চলের প্রধান হিসেবে সাফল্যের সঙ্গে দায়িত্ব পালন করায় সিলেট অফিসের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব দেয়া হয় তাকে।সেখানেও সাফল্যের স্বাক্ষর রেখেছেন তিনি। জনগণকে বীমা সুরক্ষায় আনতে চষে বেড়িয়েছেন সিলেটের প্রত্যন্ত অঞ্চল। দায়িত্ব পালন করেছেন সন্ধানী লাইফের ডিপিএস বিভাগের প্রধান হিসেবেও। প্রোগ্রেসিভ লাইফে ছিলেন সুজন বীমা প্রকল্পের প্রধান।

সেখান থেকে আরো বড় স্বপ্ন নিয়ে ২০১৭ সালের মার্চে চতুর্থ প্রজন্মের বীমা কোম্পানি ডায়মন্ড লাইফ ইন্স্যুরেন্সের মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তার দায়িত্ব গ্রহণ করেন পিপলু বিশ্বাস। আজও দক্ষতা আর সফলতার সঙ্গে সেই দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন তিনি।

পিপলু বিশ্বাস মনে করেন, বীমা ইন্ডাস্ট্রিতে ভালো করতে হলে একজন কর্মীর দুটি গুণ অবশ্যই থাকতে হবে। প্রথমত, সৎ হতে হবে। দ্বিতীয়ত, কঠিন পরিশ্রম করতে হবে। পাশাপাশি মানুষকে শ্রদ্ধা করতে হবে, ভালবাসতে হবে।

দেশের খ্যাতিমান শিল্পদ্যোক্তা, সমাজসেবকদের নিয়ে ২০১৪ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা শুরু করা ডায়মন্ড লাইফের রয়েছে  শক্তিশালী পরিচালনা পর্ষদ। রয়েছেন আত্মপ্রত্যয়ী, তরুণ, শিক্ষিত, নিবেদিতপ্রাণ কর্মী বাহিনী। মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে যাদের নেতৃত্ব দিচ্ছেন পেশাগত দক্ষতা ও অভিজ্ঞতায় ঋদ্ধ চৌকষ বীমা ব্যক্তিত্ব পিপলু বিশ্বাস।

চট্টগ্রামে ডায়মন্ড লাইফের এক অনুষ্ঠানে মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা পিপলু বিশ্বাস।

বিদায়ী বছরের সমাপনী হিসাবে নানা খাতে অগ্রগতি হয়েছে ডায়মন্ড লাইফ ইন্স্যুরেন্সের। ২০২২ সালের অনিরীক্ষিত হিসাব অনুযায়ী, বছরটিতে প্রথমবর্ষ প্রিমিয়াম বাবদ ১২ কোটি ৫ লক্ষ টাকা এবং নবায়ন প্রিমিয়াম বাবদ ৫ কোটি ১০ লক্ষসহ মোট ১৭ কোটি ১৫ লক্ষ টাকার প্রিমিয়াম সংগ্রহ করেছে কোম্পানিটি।

এই মূহূর্তে কোম্পানির এফডিআর রয়েছে ১৪ কোটি ২৫ লাখ টাকা। এরমধ্যে ট্রেজারি বন্ড আছে দেড় কোটি টাকার। বিগত বছরে ২ কোটি ৫০ লক্ষ টাকার নানা ধরনের বীমা দাবি পরিশোধ করেছে ডায়মন্ড লাইফ। এই মুহূর্তে কোনো দাবি অপরিশোধিত নেই বলে জানিয়েছেন কোম্পানির মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা পিপলু বিশ্বাস। ২০২২ সালের হিসাব সমাপনীতে লাইফ ফান্ডের নেতিবাচক অংক থেকে উঠে এসেছে কোম্পানিটি। ২০২১ সালের চেয়ে ব্যবস্থাপনা ব্যয়ও কমেছে কোম্পানিটির।

পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হতে ইতিমধ্যে ইস্যু ম্যানেজার নিয়োগ দেয়া হয়েছে। ২৪ সাল নাগাদ আইপিওতে আসার পরিকল্পনা নিয়ে অন্যান্য কাজ এগিয়ে নিচ্ছে কোম্পানিটি।

বিজ্ঞাপন

ডায়মন্ড লাইফের মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা পিপলু বিশ্বাস জানান বীমা শিল্পে ইমেজ সংকট কাটিয়ে আস্থা ফিরিয়ে আনতে তার কোম্পানি নানা পদক্ষেপ নিয়েছে। তিনি বলেন, বীমা পলিসি করতে গিয়ে গ্রাহকরা যথাসময়ে টাকা ফেরত পাওয়ার নিশ্চয়তা নিয়ে এক ধরনের শঙ্কার মধ্যে থাকেন। চতুর্থ প্রজন্মের কোম্পানিগুলো সম্পর্কে এই শঙ্কা আরো বেশি। কারণ অনেকেই নতুন কোম্পানিগুলোর সাথে পরিচিত নন। এখানে যে সরকারের নিয়ন্ত্রণ রয়েছে, মনিটরিং রয়েছে সে বিষয়ে অনেকেই জানেন না। আমরা যথা সময়ে বীমা দাবি পরিশোধ করে এই আস্থার জায়গাটি নিশ্চিত করতে চাই। আমাদের কোম্পানিতে পলিসি করে গ্রাহকের শঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। গ্রাহককে এগ্রিমেন্ট দেয়া হয়েছে। কবে নাগাদ টাকা পাবেন, তা বলা আছে। প্রিমিয়াম জমা দেয়ার সাথে সাথে এসএমএস যাচ্ছে। অ্যাপস, ওয়েবসাইটের মাধ্যমে গ্রাহক যে কোনো সময় তার প্রিমিয়ামের আপডেট জানতে পারছেন। আমরা সবকিছুকে ডিজিটালাইজড করেছি। এগুলো সবই নিশ্চয়তার জন্য, আস্থার জন্য।

বেকারত্ব দূরীকরণে বীমা খাতের ভূমিকা নিয়ে পিপুল বিশ্বাস মনে করেন, ছাত্রজীবন থেকেই খণ্ডকালীন পেশা হিসেবে বীমাকে বেছে নেয়া যেতে পারে। একজন শিক্ষার্থী লেখাপড়ার পাশাপাশি প্রতিদিন দুই ঘণ্টা বীমার জন্য সময় দিতে পারেন। এতে একদিকে তার বেকারত্ব ঘুচবে, লেখাপড়ার খরচ নিয়েও হতাশ হতে হবে না। ভবিষ্যতের কর্মস্থল নিয়েও খুব বেশি ভাবতে হবে না।#

বিশেষ প্রতিবেদক
সর্বাধিক পঠিত